বেলুন দিয়ে বানানো ঝর্ণা
মনে করো তুমি এখন ঘরে বসে আছো। তোমার তেমন কোন কাজ নেই। পড়ালেখা আজকের মতো হয়ে গেছে। বাইরে ঘুরতে যাওয়ারও আপাতত সুযোগ নেই। পড়ার মতো গল্পের বইও নেই। কী করা যায় বলতো? এটাই তাহলে উপযুক্ত সময় কিছু বৈজ্ঞানিক প্রোজেক্ট বানানোর।
আজকে আমরা যে জিনিসটি বানাবো তাঁর নাম দেওয়া যেতে পারে, পানির বেলুন ঝর্ণা। বিষয়টি খুব মজার। তাঁর আগে বলতো ঝর্ণা শুনলে কী মনে হয়? মনে হয় না উপরের কোনো জায়গা থেকে অনবরত পানি পড়ছে? মনে হয় যেন, সেই পানিতে গা ভিজিয়ে বেশ আরামে বসে থাকি।
আসো তাহলে বেলুন পানি ঝর্ণা বানাই। এটি বানাতে আমাদের যা যা লাগবে—
১। একটা প্লাস্টিকের খালি বোতল
২। একটি স্ট্র
৩। পানি
৪। বেলুন
৫। কাচি বা ছুরি
প্রথমে একটা বোতল নাও। বোতল খুঁজে পাচ্ছ না! কী যে বলো! গতকাল রাতে যে জুসটি খেলে সেই বোতলটাই নাও। খুঁজে দেখ এরকম কত বোতলই বাসায় আছে। মা হয়তো এখনও সব বোতল ফেলে দেননি, যা আছে তার মধ্যেই একটা নিয়ে নাও। এবার বোতলের মাঝ বরাবর একটা ছিদ্র করো। একটি কাচি বা ছুরি দিয়ে খুব সাবধানে ছিদ্রটি করবে যেন তোমার হাত কেটে না যায়। নাহলে মা কিন্তু খুব রাগ করবেন। ছিদ্র করা শেষ? তাহলে একটা স্ট্র যোগাড় করো। যেই স্ট্রটা বোতলের সেই ফুটো দিয়ে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। ফুটো করার উদ্দেশ্যই মূলত স্ট্র বা পাইপটি ঢুকিয়ে দেওয়া। এবার বোতলটি পানি দাও। একবারে পুরা ভরাট করে ফেলতে হবে এমনও না। মোটামুটি চারভাগের তিনভাগ ভরলেই হবে। এবার একটা বেলুন ফোলাও। ফোলানো বেলুনটা বোতলের মুখে আটকে দিতে হবে। করে ফেলেছো? এবার দেখ কী হয়? তোমার লাগানো ঐ স্ট্রটা দিয়ে কীভাবে ঝর্নার মতো করে পানি পড়ছে। সুন্দর না বেলুন পানির ঝর্ণা। ঝর্ণার পানি আটকাতে চাও? বোতলের মুখে লাগানো বেলুনটির মুখ চেপে ধর তো দেখি।
কেন এমন হলো?
এই প্রজেক্টের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা একদম পানির মতো সহজ। আমরা তো জানিই যে একটি পদার্থের ভর আছে এবং সেটি স্থান দখল করে। পদার্থ যদি বায়বীয়ও হয় তবুও সে একটি নির্দিষ্ট স্থান দখল করে। এখানে আমরা বেলুনে করে বাতাস ভরে বেলুনটি বোতলের মুখে লাগিয়ে দিয়েছি। বেলুনের বাতাস বোতলে ঢুকে গিয়েছে। বাতাস বোতলের কিছু স্থান দখল করেছে এবং বোতলের পানির উপর চাপ দিয়েছে। পানি সেই চাপে কোথাও যাওয়ার একটা পথই খুঁজছিলো আর স্ট্র সেই পথ করে দিয়েছে। ব্যাস হয়ে গিয়েছে একটি সুন্দর ঝর্ণা।
No comments